ইয়ানূর রহমান : যশোর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রী জেসমিন আক্তার হত্যা মামলায় প্রেমিকসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার আটক তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে প্রেমিক আহসান কবির অঙ্কুর আদালতে হত্যার কথা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট শম্পা বসু জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামি অঙ্কুরসহ তার ভাই ও মাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। অপর আটক আসামিরা হলো, আহসান কবির আঙ্কুরের মা হোসনেয়ারা ও ভাই আহসান হাবিব রুমেল।
গত ১০ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার শার্শার বুরুজবাগান গ্রামের আকবার আলী চৌধুরীর বাড়ির সেফটি ট্যাংকের ভিতর থেকে জেসমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। জেসমিন সাতক্ষীরা কলারোয়ার কাউরিয়া গ্রামে জাকির হোসেনের মেয়ে। তিনি যশোর পরিটেকনিক কলেজের ২য় সেমিস্টারের ছাত্রী ছিলেন।
আহসান হাবিব অঙ্কুর জানিয়েছেন, তারা দুইজন একই সেমিস্টারের লেখাপাড়াকরতেন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। উভয় পরিবার জানত। বিয়ে কথাবার্তাও পাকা ছিল। জেসমিন যশোর শহরের বারান্দীপাড়ার ভাড়া থাকত। বাসায় গেলে জেসমিনকে পাওয়া যেত না। অন্য ছেলেদের সাথে প্রেম করতো। নিষেধ করলেও শুনতোনা। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি জেসমিন অঙ্গুরের বাড়িতে গিয়েছিল। বাড়ির পিছনে তাদের দেখা হওয়ার পর কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে অঙ্কুর তার গলা চেপে ধরে। জেসমিন নিস্তেজ হয়ে গেলে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে অঙ্গুর। এরপর জেসমিনের লাশ বস্তায় ভরে সেফটি ট্যাংকের ভিরত ফেলে দেয়। এ ঘটনার সাথে তার পরিবারের কেউ জড়িত নেই বলে জানিয়েছেন অঙ্কুর।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি জেসমিন আক্তার যশোর থেকে বাড়ি আসবে বলে ফোনে মাকে জানিয়েছিল। এ দিন বাড়ি না যাওয়ায় ও তার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ পাওয়ায় যায়। খোঁজাখুজি করে জেসমিনকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তার পিতা জাকির হোসেন গত ৫ ফেব্রুয়ারি কোতয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। শুক্রবার শার্শার বুরুজবাগান গ্রামের আকবর আলী চৌধুরীর বাড়ির পিছনের সেফটি ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ জেসমিনের স্বজনেরা আকবর আলীর বাড়ি এসে লাশ সনক্ত করেন।
এ ঘটনায় নিহত জেসমিনের ভাই আনিছুর রহমান ৮ জনকে আসামি করে শার্শা থানায় মামলা করেন। আসামিরা হলো, আকবর আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী হোসনেয়ারা এবং দুই ছেলে অঙ্কুর ও রুমেল। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আঙ্কর ও তার মা
হোসনেয়ারা এবং ভাই রুমেলকে আটক করা হয়। শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ ফজলুল হক আটক তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করে। এদের মধ্যে অঙ্গুর তার প্রেমিক জেসমিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ওই জবানবন্দি দিয়েছেন।
Leave a Reply